ভূমিকা:- শিবলিঙ্গ নিয়ে যেন অপপ্রচারের বিকল্প নেই। পরমেশ্বর শিবকে অপমানিত করার উদ্দেশ্যেই এই অপসংস্কৃতির ভাইরাসরা পরমেশ্বর শিবের নামে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করে আসতেছে। ভাইরাস গুলো নিজেদের দল ভারী করার লক্ষ্যে শিবনিন্দা প্রচারের মাধ্যমে শিব মাহাত্ম্যকে অপমানিত করার জন্যে পবিত্র শিবলিঙ্গকে যৌনাঙ্গের সাথে তুলনা করে থাকে। এবং এই যৌনশক্তিবৃদ্ধিকারী কদর্য ভাইরাসদের মস্তিষ্কে নোংরা দৃশ্যের ভাবভঙ্গির কারণেই পবিত্র শিবলিঙ্গকে যৌনাঙ্গের সাথে তুলনা করার চেষ্টা করে। ধর্মজ্ঞানহীন সাধারণ সনাতনীদের মাঝে যখন শিবলিঙ্গ নিয়ে মিথ্যাচার করে তখন সাধারণ সনাতনীরা ধর্মজ্ঞানহীনের কারণে না বুঝেই তাদের দলে যোগদান করে। ঠিক তখন আমরা মৌনতা ভঙ্গ করে প্রতিবাদ করতে বাধ্য হই। আজকে এই মঞ্চে অপসংস্কৃতি ভাইরাসদের শিবলিঙ্গ নিয়ে মিথ্যাচারের চুলচেরা জবাব দেওয়া হবে। পাঠকগণ ! নিচে উল্লেখিত আর্টিকেল অনুযায়ী সূচিপত্রে ক্লিক করে ধৈর্য সহকারে সম্পূর্ণ তথ্যটি অনুধাবন করুন ।
লিঙ্গ শব্দের অর্থ বিচার
প্রকৃতপক্ষে, লিঙ্গ শব্দের অর্থ কী? সংস্কৃত লিঙ্গ, (লিঙ্গ); শব্দের অর্থ হলো “প্রতীক” বা চিহ্ন। লিঙ্গ শব্দটির উৎপত্তি সৎস্কৃত লিঙ্গম্ শব্দ থেকে যার অর্থ প্রতীক বা চিহ্ন। কিন্ত বাংলায় এই শব্দটি ব্যাকরণ শাস্ত্রে কোনো ব্যক্তি বা বস্তু পুরুষ, স্ত্রী নাকি ক্লীব প্রভৃতি চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত হয়। এবং অজ্ঞতাবশত লিঙ্গ শব্দটি তার অর্থ পরিবর্তন করে পুরুষ জননেন্দ্রিয় অর্থও লাভ করেছে যা বিকৃত এবং অশালীন। শিবনিন্দুকগণ! শিবলিঙ্গকে যৌনাঙ্গের সাথে তোলনা করার উদ্দেশ্যে যে অভিধান সংক্রান্ত থেকে প্রমাণ করতে চেষ্টা করে। আমরা সেই অভিধান সংক্রান্তই এই মঞ্চে যুক্ত করলাম।
প্রথমত:- অসনাতনীরাদের ব্যবহার কৃত অভিধান
Online কর্তৃক English and Bengali Dictionary এর শব্দচয়নে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। লিঙ্গ শব্দের অর্থ শিশ্ন, উপস্থ, পুং-জননেন্দ্রিয়, শিবমূর্তিবিশেষ, এবং ব্যকরণের স্ত্রীলিঙ্গ, পুংলিঙ্গ, ক্লীবলিঙ্গের ভেদ বুঝিয়েছে। এখানেও একাধিক শব্দের অর্থ বহন করেছে। আমরা জানি, ব্যকারণে এমন অনেক শব্দ আছে যেগুলো কোনোটি পুরুষ জাতীয়, কোনোটি স্ত্রী জাতীয়, কোনোটি আবার স্ত্রী-পুরুষ উভয়কেই বোঝায়। তাই যেসব চিহ্ন বা লক্ষণ দ্বারা শব্দকে পুরুষ, স্ত্রী বা অন্য জাতীয় হিসেবে আলাদা করা যায়, তাকে লিঙ্গ বলে। প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে। বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ঢাকা কর্তৃক প্রকাশিত বাংলা ব্যাকরণ, ৮ম শ্রেনীর বইপুস্তকে লিঙ্গ শব্দের অর্থ চিহ্ন ধরেছে।
দ্বিতীয়ত:- নাস্তিকগোষ্ঠির ব্যবহার কৃত অভিধান
মনিয়র উইলিয়মস এর সংস্কৃত-ইংরেজি অভিধান থেকে দেখা যায়, প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে। লিঙ্গ শব্দের অর্থ একাধিক অর্থ বহন করেছে। যেমন:- a mark, spot, sign, token, badge, emblem অর্থ সুস্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। দর্শকের সুবিধার্থে মনিয়রের অভিধানটি পুনরায় নিচে যোগ করেছি।
স্পষ্ট ধারণা মেলে মনিয়র উইলিয়মস তিনিও প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে লিঙ্গ শব্দের অর্থ একাধিক অর্থ বহন করেছে। যদিও অভিধানের কাজ হচ্ছে শব্দের অর্থ যাচাই করা। কিন্তু আপ্তে ও মনিয়র উইলিয়মস তাদের ব্যক্তিগত উপস্থাপনায় শিবলিঙ্গকে শিবের যৌনাঙ্গ বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে। যা আমাদের শাস্ত্র বিরুদ্ধ। মন্ত্র ও শ্লোক বিরুদ্ধ। কোনো একক ব্যক্তি ব্যক্তিগত ভাবে শিবলিঙ্গকে শিবের যৌনাঙ্গ বলে সিদ্ধান্ত দিলে। তা কখনো সনাতনীদের মান্য নয়। কেননা আমাদের শাস্ত্রে শিবলিঙ্গ শব্দের অর্থ শিবের যৌনাঙ্গ নয়। আমাদের শাস্ত্রে প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে লিঙ্গ শব্দের অর্থ অনুমান, চিহ্ন, শিবমূর্তিবিশেষ হিসেবে বিবেচনা করেছে। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
[ আমাদের সনাতনীদের শাস্ত্রসমূহ না অধ্যায়ণ করেই। না বুঝে, শাস্ত্রের বিপক্ষে কোনো ব্যক্তি যে কোনো সিদ্ধান্ত দিলেই তা সনাতনীদের মান্য নয়। কেননা “সনাতন ধর্ম কারো সিদ্ধান্তে মান্য নয়। সনাতন ধর্ম শাস্ত্রীয় সিদ্ধান্তেই মান্য হয়”। তাই আস্তিক, নাস্তিক, সনাতনী ,অসনাতনী যে কেহ শিবলিঙ্গকে পুরুষ যৌনাঙ্গের সাতে তুলনা করলে তা আমাদের সনাতনীদের মান্য নয়। কেননা আমাদের শাস্ত্রে প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে শিবলিঙ্গ শব্দের অর্থ চিহ্ন, অনুমান ও শিবমূর্তিবিশেষ হিসেবে গন্য হয়েছে]
শাস্ত্রমতে লিঙ্গার্থ বিচার
উপরের “লিঙ্গ শব্দের অর্থ বিচার” আলোচনায় বাংলা ইংরেজি বিভিন্ন অভিধান থেকে দেখতে পেলাম লিঙ্গ শব্দের অর্থ একাধিক অর্থ বহন করে। এবং প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ শিক্ষাবোর্ড লিঙ্গ শব্দের অর্থ চিহ্ন অথবা অনুমান ধরেছে। এবং সে সাথে সাথে আমরা বলেছি যে, আমাদের শাস্ত্র সমূহেও শিবলিঙ্গ শব্দের অর্থ পুরুষের যোনাঙ্গ নয়। চিহ্ন, অনুমান, শিবমূর্তিবিশেষ বুঝিয়েছে। এখন আমাদের শাস্ত্রসমূহ থেকে দেখে নেওয়া যাক। প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে লিঙ্গ শব্দের অর্থ শাস্ত্র প্রদর্শন করে প্রমাণ সহ নিচে বিশ্লেষণ করা হলো।
[আমাদের সানতনী শাস্ত্র সমূহতে লিঙ্গ শব্দের অর্থ “যৌনাঙ্গ” তাহার নামগন্ধ শাস্ত্রসমূহে নেই ]
সরস্বতী দেবীর লিঙ্গার্চ্চনা
যৌনশক্তিবৃদ্ধিকারী কদর্য ভাইরাসদের মস্তিষ্কে নোংরা দৃশ্যের ভাবভঙ্গির কারণেই পবিত্র শিবলিঙ্গকে পুরুষের যৌনাঙ্গের সাথে তুলনা করার চেষ্টা করেন। এবং যেখানে লিঙ্গ শব্দটি দেখতে পেলেই পুরুষ যৌনাঙ্গের চিন্তা করে বসেন। আপনারা দয়া করে নিচে উল্লেখিত প্রমাণটি দেখুন এখানে কি উল্লেখযোগ্য আছে! এখানে সরস্বতী দেবীর লিঙ্গার্চ্চনা করেছিলেন।
শিবলিঙ্গ কি শিবের যোনাঙ্গ
লিঙ্গ শব্দটি দেখতে পেলেই। কদর্য ভাইরাসদের মস্তিষ্কে নোংরা দৃশ্যের ভাবভঙ্গির কাল্পনিক গল্প ঠাওর হয়েছে এই শব্দ দ্বারা, যেটা কদর্য ভাইরাসরা পুরুষ যৌনাঙ্গের সাথে তুলনা করে। প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে আমাদের পুরাণাদি শাস্ত্রে শিবলিঙ্গ বলতে কি বুঝিয়েছে। তা শিবমহাপুরাণ থেকে শাস্ত্র প্রদর্শন সহ প্রতিটি শব্দের অর্থ সহ বিশ্লেষণ করা যাক
লিঙ্গবেদির্মহাদেবী লিঙ্গং সাক্ষান্মহেশ্বরঃ।লয়নাল্লিঙ্গমিত্যুক্তং তত্রৈব নিখিলং জগৎ॥ সরলার্থ – শিবলিঙ্গের যেটি বেদি অর্থাৎ অর্ঘা¹, তা মহাদেবী পার্বতীর স্বরূপ এবং লিঙ্গ সাক্ষাৎ মহেশ্বর²। লয়ের অধিষ্ঠান হওয়ায় পরমেশ্বর শিবকে লিঙ্গ বলা হয়³, কারণ এর মধ্যেই নিখিল জগৎ লয় হয়⁴॥
শিবলিঙ্গ বলতে কি বুঝায়
সুতদেব বললেন মনীশ্বরগণ! তোমাদের এই প্রশ্ন অত্যন্ত পবিত্র এবং রহস্যময়। মহাদেবী এই বিষয় বলতে পারেন অন্য কোন পুরুষ কখনো কোথাও এটি প্রতিপাদন করতে পারেন না। এই প্রশ্নের সমাধানের জন্য ভগবান শিব যা বলেছিলেন এবং আমার গুরুদেবের মুখে যেমন শুনেছি সেটি ক্রমশ বর্ণনা করছি। ভগবান শিবই একমাত্র ব্রহ্ম স্বরূপ হওয়ায় তাকে নিষ্কল ( নিরাকার) একমাত্র বলা হয়। রূপবান হওয়ায় তাকে সকলও বলা হয়। তাই তিনি সকল এবং নিষ্কল দুইই। শিব নিষ্কল নিরাকার হওয়ায় তার পূজার আধারভূত লিঙ্গ ও (সংস্কৃত লিঙ্গ শব্দের অর্থ প্রতীক বা চিহ্ন) নিরাকার অর্থাৎ শিবলিঙ্গ শিবের নিরাকার সরূপের প্রতীক। তেমনি শিব সকল বা সাকার হওয়ায় তার পূজার আধারভূত বিগ্রহ সাকাররুপ। সকল এবং অকল ( সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সহ সাকার এবং অঙ্গ-আকার থেকে সর্বতোভাবে রহিত নিরাকার) রুপ হওয়াতেই তিনি ব্রহ্ম শব্দ দ্বারা কথিত পরমাত্মা । পরমেশ্বর শিবের নিষ্কল (পরমব্রহ্ম) স্বরূপের প্রতীক হল শিবলিঙ্গ। নিচে শাস্ত্র প্রদর্শন সহ প্রমাণ দেখুন।
অপি লিঙ্গে চ বেরে চ নিত্যমভ্যর্চ্যতে জনৈঃ ।অব্রহ্মত্বাত্তদন্যেষাং নিষ্কলত্বং ন হি ক্বচিৎ ॥ সরলার্থঃ– সকলেই লিঙ্গ (নিরাকার) ও মূর্তি (সাকার) দুটি রূপেই সর্বদা শিবের আরাধনা করে থাকেন। শিব ছাড়া কোনো দেবতাই সাক্ষাৎ ব্রহ্ম নয়, তাই কোথাও তাদের নিরাকার লিঙ্গ নেই।
শিবমহাপুরাণে বিদ্যেশ্বর সংহিতার পঞ্চম অধ্যায়ের ১০ নং শ্লোকে বলা হয়েছে – শিবৈকো ব্রহ্মরূপত্বান্নিষ্কলঃ পরিকীর্তিতঃ॥ অনুবাদ:- একমাত্র ভগবান শিবই ব্রহ্মরূপ হবার কারণে নিষ্কল (নিরাকার) বলা হয়। নিচে শাস্ত্র সহ গীতাপ্রেসকৃত সংক্ষিপ্ত শিবপুরাণ থেকে প্রমাণ দেখুন। উপরের শিবপুরাণ থেকে শব্দ চয়ণে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, ভগবান শিব রূপবান হবার কারণে তাকে “সকল” বলা হয়। এইকারনে তিনি সকল ও নিষ্কল দুটোই। পরমেশ্বর শিবের নিষ্কল (নিরাকার) হবার কারণেই তার পূজার আঁধার লিঙ্গ (প্রতীক) নিরাকার অর্থাৎ শিবলিঙ্গ শিবের নিরাকার স্বরূপের প্রতীক। এভাবেই পরমেশ্বর শিবের সকল বা সাকার হবার কারণে তার সাকার বিগ্ৰহে পূজা করা হয়, অর্থাৎ তার (শিবের) সাকার স্বরূপের প্রতীক শিব বিগ্ৰহ। সকল ও অকল (নিষ্কল) রূপের কারণেই শিব “ব্রহ্ম” নামে খ্যাত পরমাত্মা। আর লিঙ্গ রূপে সৃষ্টিকর্তার (শিব) পুজা করা হয়।
[ সিদ্ধান্ত –শিব লিঙ্গ হল ব্রহ্মের নিরাকার স্বরূপে প্রতীক। শিব লিঙ্গ সাক্ষাৎ মহেশ্বর। শিবের নির্দিষ্ট কোনো অঙ্গ নয়। শিবলিঙ্গ হল ব্রহ্মের (শিবের) নিষ্কল স্বরূপ তাই পরমেশ্বর শিবের লিঙ্গে পূজার্চনা হয়]
শিবলিঙ্গকে শিশ্ন বলার শাস্তি
যেটেকে আমরা সকল সনাতনীরা মান্য করি সেটাকে অপপ্রচারের ভাইরাসরা কেড়ে নিয়ে অপপ্রচার করে। আর যেটাকে আমরা অমান্য করি সেটাকেও জোড় পূর্বক আমাদের চাপিয়ে দিয়ে অপপ্রচারের ভাইরাসরা অপপ্রচার করে থাকে। শিবলিঙ্গকে পুরুষাঙ্গ বলা আমাদের শাস্ত্র বিরুদ্ধ। আর আমরা সনাতনীরা শাস্ত্র বিরুদ্ধ কোনো ঘটনা মান্যতা দেই না। তাই শিবলিঙ্গকে পুরুষাঙ্গ বলা কোনো প্রশ্নই উঠে না। তবুও অপসংস্কৃতি ভাইরাসরা শিবলিঙ্গকে পুরুষাঙ্গ বলে আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। শিবলিঙ্গ যদি পুরুষাঙ্গ হতো। তাহলে শিবলিঙ্গকে পুরুষাঙ্গ বলে দাবী করলে শাস্তি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতো না। শিব লিঙ্গকে যৌনাঙ্গ বলে উল্লেখ করলে পাপ হয়। নিচে পদ্মপুরাণ থেকে শাস্ত্র সহ প্রমাণ দেখুন।
যৌনাঙ্গকৃতি শিবলিঙ্গ নিয়ে মন্তব্য
[বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন সোসিয়াল মিডিয়া, বিভিন্ন অপপ্রচারকারী, বিভিন্ন যৌনাঙ্গ আকৃতি শিবলিঙ্গ নিয়ে অপপ্রচার করে থাকে। আমরা সনাতনীরা যা মান্য করি না। তাই যেন জোড় পূর্বক আমাদের চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। অধিকাংশ যৌনাঙ্গ আকৃতি শিবলিঙ্গ গুলো অসনাতনীরা এডিট করে সাজিয়ে গুছিয়ে সোসিয়াল মিডিয়ায় অপপ্রচারের করে থাকে যা বিকৃত ও অশালীন। তাছাড়া বহু স্থানে মোগল শাসকেরা শিবলিঙ্গের উপর বিকৃত চিহ্ন খোদিত করে দিয়ে গেছে। তৎকালীন সময়ে বিকৃত চিহ্ন গুলো দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করতে সুবিধা হতো। তাই এই শাসকরা শিবলিঙ্গের উপর বিকৃত চিহ্ন খোদিত করেছে। এছাড়া অনেক ব্যক্তি সনাতনী শাস্ত্র বা শৈবপরম্পরার মান্যতা তথা রীতিনীতি সম্পর্কে না জেনেই জৈন তথা বৌদ্ধদের স্থাপিত বৌদ্ধমূর্তিকে বা জননাঙ্গরূপ মূর্তিতে বাসুকি ও অনান্য দেবদেবীর মূর্তি আমদানি করে বসিয়ে শিবলিঙ্গ বা শিবপ্রতিমা বলে পূজা করছে, যা আমাদের শাস্ত্র বিরুদ্ধ। আর এসবের ছবি আমাদের দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। কেননা এসব আমাদের সনাতনীদের শৈব পরম্পরার আদর্শে চলে না। সুতরাং সনাতনীদের শৈবপরম্পরার মান্যতাই যেখানে শিবলিঙ্গকে জননাঙ্গ বলে স্বীকার করে না সেখানে বৌদ্ধ জৈনদের মূর্তি দেখিয়ে অপকৌশলে শিবলিঙ্গ কে জননাঙ্গ প্রমাণ করাটা চরম অজ্ঞতা ছাড়া আর কিছু নয়]
উপসংহার
অপসংস্কৃতির ভাইরাসরা শিবলিঙ্গ নিয়ে যতই অপপ্রচার করে থাকোক না কেন? শিবলিঙ্গ কখনোই পুরুষাঙ্গ নয়। লিঙ্গ শব্দের অর্থ শুধু যৌনাঙ্গ নয়। প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে লিঙ্গ শব্দের অর্থ একাধিক অর্থ বহন করে থাকে। যা আমরা আস্তিক, নাস্তিক, অসনাতনীদের অভিধান থেকে পূর্বেই দেখিয়েছি। শিবলিঙ্গ হচ্ছে সাক্ষাৎ শিব। নির্দিষ্ট কোনো একটি অঙ্গ নয়। পরমেশ্বর শিবের নিষ্কল (নিরাকার) হবার কারণেই তার পূজার আঁধার লিঙ্গ (প্রতীক) নিরাকার অর্থাৎ শিবলিঙ্গ শিবের নিরাকার স্বরূপের প্রতীক। কেহ যদি শিবের (নিষ্কল) নিরাকার স্বরূপের প্রতীককে পুরুষাঙ্গের সাথে তোলনা করে তার পাপ গ্রহণযোগ্য। তাই শিবলিঙ্গকে কখনোই পুরুষাঙ্গ সাথে তুলনা করা যাবে না। শিব শব্দের অর্থ ‘মঙ্গল’ এবং আমাদের শাস্ত্রে প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে লিঙ্গ শব্দের অর্থ ‘প্রতীক’। ভগবান শিবের যে মঙ্গলময় রূপ, তা-ই শিবলিঙ্গ।
যথাযথ যুক্তির মাধ্যমে বুঝিয়ে বলার জন্য আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ🙏💕🙏💕🙏💕