সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ!
প্রথমে জানাই, কাউকে আঘাত দেবার উদ্দেশে নয়, বরং সত্যর মণ্ডন ও অসত্য পাখণ্ডতার নির্মম খণ্ডন করার জন্যই এই লেখা। অধুনা আর্যসমাজীরা বেদাদি শাস্ত্রের অপব্যাখ্যা করার সময়ে বারবার তাদের প্রতিষ্ঠাতা দয়ানন্দস্বামীকে মহর্ষি বলে উল্লেখ করে। আমরা আজ শাস্ত্রপ্রমাণে তাঁর মহর্ষিত্বর খণ্ডন করবো। তবে দয়ানন্দ ও আর্যসমাজীদের মতন কাউকে গালি দেব না। শাস্ত্রীয় যুক্তি তর্কে দয়ানন্দের মহর্ষিত্বর খণ্ডন করবো।
এই লেখার বিরুদ্ধে যাবতীয় আইনি প্রক্রিয়া কলকাতা উচ্চ ন্যায়ালয়ের অধীনে পড়ছে।
প্রথমত:- দয়ানন্দস্বামী (এই সম্বোধনে আর্যসমাজীদের আপত্তি থাকলে আমাদের জানাবেন, শুধু দয়ানন্দ নামে সম্বোধন শুরু করবো) ঋগ্বেদ শাকল সংহিতার অগ্নিঃ পূর্বেভিঃ মন্ত্রের অর্থ করতে গিয়ে লিখেছেন যে যা নিরুক্ত, শতপথ আদি সত্য গ্রন্থের বিরুদ্ধ, তা সত্য কীভাবে হতে পারে? {অগ্নিঃ পূর্বেভিঃ মন্ত্রের ভাষ্য, ঋগ্বেদ শাকল সংহিতা ১।১।২ মন্ত্র}। অর্থাৎ এর থেকে বোঝা গেল যে দয়ানন্দস্বামী নিরুক্তকে সত্য গ্রন্থ বলে মানতেন।
দ্বিতীয়ত:- যখন পূর্বে ঋষিরা চলে যাবার পরে মানুষরা দেবতাদের জিজ্ঞেস করলেন, এখন আমাদের ঋষি কে হবেন? তাঁরা (দেবতারা) তাঁদের (মানুষদের) এই তর্ক নামক ঋষি দিলেন। (নিরুক্ত ১৩।১২)
সমাজীদের দ্বারা প্রকাশিত নিরুক্ত (দুর্জনতোষন্যায়ে সমাজী প্রকাশিত বই থেকেই উদ্ধৃত করা হল)। এর থেকে বোঝা যায় যে নিরুক্ত অনুসারে ঋষিদের কাল চলে গেছে। বর্তমানে আর কেউ ঋষি নন। তাই দয়ানন্দস্বামীকে মহর্ষি তো দূরস্থান, ঋষি রূপে উল্লেখ করা মানেই হল নিরুক্তর বিরুদ্ধাচরণ করা, যা আবার দয়ানন্দর মতে সত্যগ্রন্থ।
[অর্থাৎ নিরুক্ত যদি সত্য হয়, দয়ানন্দস্বামীকে ঋষি বলা ভুল। দয়ানন্দস্বামীকে ঋষি বললে নিরুক্তকে সত্যগ্রন্থ বলা ভুল। আবার তখন নিরুক্তকে সত্যগ্রন্থ বলে দাবি করায় দয়ানন্দস্বামী স্বয়ং অসত্যভাষণের দায়ে অভিযুক্ত হবেন। এখানে সমাজীরা উভয়তঃ পাশারজ্জুতে বদ্ধ। তাঁরা কী বলেন জানার অপেক্ষায় রইলাম।]
তৃতীয়ত:- সংস্কৃতের পণ্ডিত অধ্যাপক শ্রী নিত্যানন্দ মিশ্র মহাশয় যুক্তি দিয়ে দয়ানন্দস্বামীর ঋষিত্ব খণ্ডন করেছেন। জিজ্ঞাসুদের চলচ্চিত্রটি দেখতে অনুরোধ জানাই। তিনি পরিষ্কারভাষায় বলেছেন, বেদমন্ত্রের দ্রষ্টাদের ঋষি বলা হয়। দয়ানন্দস্বামী কোনো মন্ত্রের দ্রষ্টা না হওয়ায় ঋষি পদবাচ্য নন।
দয়ানন্দ ঋষি ছিলেন না – অধ্যাপক নিত্যানন্দ মিশ্র
তথ্যসূত্র: ১। দয়ানন্দ, ঋগ্বেদ শাকল সংহিতা। ২। রাজারাম, নিরুক্ত
🔴 বোধায়ন গৃহ্যসূত্র ১.৭.২-৮ অনুসারে দয়ানন্দর ঋষিত্বর হাস্যাস্পদ দাবির খণ্ডন
পাখণ্ডী সমাজীরা কল্পকে আদৌ মানে না (অবশ্য এরা কোনো আর্ষ গ্রন্থকেই মানে না), এখন কল্প থেকে একটা বচন তুলে এরা দাবি করছে যে দয়ানন্দ ঋষি ছিলেন, কারণ তিনি চার বেদ পড়েছিলেন। আসুন শাস্ত্রপ্রমাণে এই হাস্যকর দাবির সত্যতা বিচার করি। ঐতিহাসিক ভাবে দেখলে কাশী শাস্ত্রার্থে (১৮৬৯) দয়ানন্দ স্বীকার করে নিয়েছিলেন যে তাঁর বেদ কণ্ঠস্থ ছিল না।
দয়ানন্দর নিজ বক্তব্য অনুসারে তিনি সামবেদী বংশে জন্মেও যজুর্বেদ পড়েছিলেন। নিজ বেদ, শাখা না পড়ে অন্য শাখা পড়লে তাকে শাখারণ্ড বলা হয়। এজন্য দয়ানন্দ শাখারণ্ড উপাধিতে ভূষিত হবার যোগ্য।
আরও দেখুন, বৌধায়ন গৃহ্যসূত্র ১.৭.৮ নং বাক্যের আগের বাক্যগুলোতে সূত্র আদি অঙ্গ সহ বেদের পাঠ করতে বলা হচ্ছে। এগুলো দয়ানন্দ আদৌ গুরুমুখে শ্রবণ পূর্বক অধ্যয়ন করেননি।
[এতদ্দ্বারা দয়ানন্দস্বামীর ঋষিত্ব খণ্ডন হলো]
এই লেখার বিরুদ্ধে আইনি কার্য মাননীয় কলকাতা উচ্চ ন্যায়ালয়ের অধীনস্থ।
সমাজীরা কেউ শাস্ত্রার্থ করতে চাইলে সরাসরি “সনাতন ধর্ম জ্যোতি” মঞ্চে যোগাযোগ করুন।
সনাতনীদের ভিতরে এভাবে কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ হোক। দু দল থেমে গেলে মঙ্গল। নচেৎ বিধর্মীরা দুর্বলতা খুঁজে পেয়ে বসবে!